ডাঃ জাকির আবদুল করিম নায়েক  ১৯৬৫ সালের ১৫ অক্টোবর ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.বি.বি.এস ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে পেশায় একজন ডাক্তার হলেও ১৯৯১ সাল থেকে তিনি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারে একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশ করার ফলে চিকিৎসা পেশা থেকে অব্যাহতি নেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে কুরআন ও সহীহ্‌ হাদীসের আলোকে বিজ্ঞান, গঠনমূলক যুক্তি ও অন্যান্য প্রমাণাদির মাধ্যমে তিনি ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে ব্যাখ্যা করার প্রয়াসী হন। এ সময়ে ইসলামের দাওয়াদের পাশাপাশি অমুসলিম ও অসচেতন মুসলিম বিশেষ করে শিক্ষিত মুসলিমদের মধ্য থেকে ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্তিপূর্ণ ধারণা ও বিশ্বাস দূরিকরণার্থে ভারতের মুম্বইয়ে তিনি ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (IRF) নামক এক দাতব্য প্রতিষ্ঠান চালু করেন।

উল্লেখ্য যে, ইসলাম ওতুলনামূলক অন্যান্য ধর্মের ওপরে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিশি তথ্যাবলি ইসলামিক রিচার্স ফাউন্ডেশনের সংগ্রহে রয়েছে। পরবর্তীতে তাঁরই উদ্যোগে আই.আর.এফ ‘এডুকেশনাল ট্রাস্ট’ ও ‘ইসলামিক ডিমেনসন’ নামক দুটি সংস্থাও প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত। এজন্য আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক (বিশেষত তাদের নিজস্ব টিভি নেটওয়ার্ক ‘Peace TV’, ইন্টারনেট এবং প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের কাছে এটি ইসলামের প্রকৃত রূপকে উপস্থাপনে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। গৌরবান্বিত কুরআন ও সহীহ হাদীসের পাশাপাশি মানবীয় কারণ, যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সাপেক্ষে এটি প্রকৃত সত্য সম্পর্কে পৃথিবীর মানুষের বোধগম্যতা ও ইসলামের শিক্ষার শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাখ্যা প্রদান করে।

ডা. জাকির মূলত ইসলামের দাঈ’র অনন্য দৃষ্টান্ত। ‘ইসলামিক রিচার্স ফাউন্ডেশন’ গঠন ও তার পরিচালনার কঠিন সংগ্রমের পেছনে তিনিই প্রধান তদারককারী। আধুনিক ভাবধারার এই পণ্ডতের ইসলাম ও তুলনামূলক অন্যান্য ধর্মের বিশ্লেষণে বিশ্ববিখ্যাত সুবক্তা ও বিশিষ্ট লেখক হিসেবেও জুড়ি নেই। তার বক্তব্যের পক্ষে ব্যাপকভাবে অক্ষরে অক্ষরে গৌরবান্বিত কুরআন, সহীহ্‌ হাদীস ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে তথ্য ও প্রমাণপঞ্জি, প্রষ্ঠা নম্বর, খণ্ড ইত্যাদিসহ উল্লেখ করার কারণে যে কেউ তার বক্তব্য বা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করুক বা তার এ পর্ব শ্রবণ করুক না কেন, সে বিস্মিত ও অভিভূত না হয়ে পারে না। জনসমক্ষে আলোচনার সুতীক্ষ্ন ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য উত্তর প্রদানের জন্য তিনি সুপ্রসিদ্ধ।

শেখ আহমাদ দীদাত ১৯৯৪ সালে ডা. জাকির নায়েককে ইসলাম ও তুলনামূলক অন্যান্য ধর্ম বিষয়ে বিশ্ববিখ্যাত বক্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ২০০০ সালের মে মাসে দাওয়াহ্‌ ও তুলনামূলক আন্যান্য ধর্মের ওপর গবেষণার জন্য ‘হ তরুণ! তুমি যা চার বছরে করেছ, তা করতে আমার চব্বিশ বছর ব্যয় হয়েছে – আলহামদুলিল্লাহ’ খোদাই করা একটি স্মরক প্রদান করেন।

আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, সাউথ আফ্রিকা, মৌরিতানিয়া, অষ্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, ঘানা (দক্ষিন আফ্রিকা) সহ আরো অনেক দেশে এ পর্যন্ত নয়শোরও বিশি বার জনসম্মুখে প্রকাশ্য আলোচনায় বিভিন্ন ধর্ম বিশেষ করে ইসলাম, খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মের ওপর তুলনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। উপরন্তু ভারতেও তিনি অসংখ্য বার বক্তব্য প্রদান করেছেন। যার অধিকাংশ অডিও এবং ভিডিও আকারে এবং ইদানীং বিভিন্ন ভাষায় গ্রন্থকারে পাওয়া যায়। বিশ্বের একশোরও বেশি দেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতি টিভি ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে ডা. জাকিরকে প্রতিনিয়ত দেখা যায়। তিনি প্রায় প্রতিনিয়তই সাক্ষাৎকারের জন্য আমন্ত্রিত হন।

তিনি সাধারণত ইংরিজিতে বক্তব্য দেন। তার অধিকাংশ বক্তব্য ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ‘Peace TV’- এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হয়। তার বক্তব্যগুলোতে খুবই অসাধারণ ভূমিকা রয়েছে এবং একজন আন্তর্জাতিক বক্তা হিসেবে তিনি তার প্রায় সকল বক্তব্যে কুরআন ও সহীহ হাদীসের বাণীগুলো বিজ্ঞান ও যুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেন। ফলে দর্শক ও শ্রোতারা সহজেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন। ধর্মগ্রন্থগুলো সম্পূর্ণভাবে মুখস্থ করার মতো অসাধারণ গুণটি তার সম্পর্কে বিশেসভাবে লক্ষণীয় একটি বিষয়। মনে হয় কুরআন, বাইবেলের বিভিন্ন সংস্করণ, তালমুদ, তাওরাত (ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ), মাহাভারত, ম্যানুসম্যারিটি, ভগবতগীতা ও বেদসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলোর হাজার হাজার প্রষ্ঠা সম্পূর্ণভাবে মুখস্থ রয়েছে। তাছাড়াও বৈজ্ঞানিক ও গাণিতি বিষয় এবং তও্বেও রয়েছে তার পূর্ণ দখল। কেননা তিনি কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করলে তার পৃষ্ঠা, অধ্যায় ও খণ্ডসহ উল্লেখ করেন।

ডঃ জাকির নায়েকের নিম্নলিখিত বাংলা সংস্করণ করা বইগুলো পাঠকদের ইসলামকে সঠিক ভাবে জানতে এবং ইসলামের আলোকে ছড়িয়ে দিতে মুসলিমদের সাহায্য করবে। আল্লাহ ডঃ জাকির নায়েক ও যারা অনুবাদ করেছেন তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন।

  1. আল-কুরআন বুঝে পড়া উচিত
  2. আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি?
  3. বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ব
  4. বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা
  5. বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থে মুহাম্মদ (সা)
  6. চাঁদ ও কুরআন
  7. প্রধান ধর্মগ্রন্থসমূহে স্রষ্টার ধারনা
  8. ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্ম-এর মধ্যে সাদৃশ্য
  9. ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা
  10. ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের আপত্তি সমূহের জবাব প্রসঙ্গ-বহু বিবাহ
  11. ইসলামের কেন্দ্রবিন্দু
  12. ইসলামিক লেবেল
  13. মানুষের জন্য আমিষ খাদ্য কি অনুমোদিত বা নিষিদ্ধ
  14. মিডিয়া এবং ইসলাম
  15. পোশাকের নিয়মাবলি
  16. পশ্চিমারা কেন ইসলাম গ্রহণ করছে?
  17. প্রশ্নোত্তরে ইসলামে নারীর অধিকার
  18. ইসলামের ওপর অভিযোগ এবং দলিলভিত্তিক জবাব
  19. বিজ্ঞানের আলোকে কুরআন ও বাইবেল
  20. ক্বোরআন কি আল্লাহর বানী?
  21. কুরআনের চ্যালেঞ্জ
  22. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নামায
  23. ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের প্রশ্নের জবাব
  24. সালাত
  25. ইসলামের ও হিন্দু ধর্মের সাদৃশ্য
  26. সন্ত্রাসবাদ কি শুধু মুসলমানদের জন্যে প্রযোজ্য?
  27. সন্ত্রাসবাদ ও জিহাদ সম্পর্কে আলোচনা
  28. বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের জবাব
  29. সুদমুক্ত অর্থনীতি
  30. সুন্নাত ও বিজ্ঞান
  31. কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান বিরোধ না সাদৃশ্য
  32. ইসলামে নারীর অধিকার, সেকেলে নাকি আধুনিক
  33. যিশু কি সত্যিই ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিল?
ফেসবুকে যারা মন্তব্য করেছেনঃ

(Visited 10,785 times, 1 visits today)